**রংপুর নাগরিক সমাজ(RNS) সংগঠনের নিউজ পোর্টাল rnsnews24.com এ স্বাগতম।  *** প্রতিনিধি নিয়োগ*** রংপুর বিভাগের সকল জেলা ও রংপুর জেলার সকল উপজেলায় প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। যোগাযোগ- 01722-882770 ।  *** সবার আগে নির্ভুল সংবাদ পেতে নিয়মিত ভিজিট করুন।
শিরোনাম :
প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে খুলনায় দেশীয় তামাক চাষীদের মানববন্ধন   রংপুরে প্রাইম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৬ শতাধিক চিকিৎসক নিয়ে ডক্টরস নাইট অনুষ্ঠিত জাতীয় বডি বিল্ডিংয়ে মিষ্টার বাংলাদেশ কে এই রংপুরের আহসানুল হক রংপুরে দুই পুলিশ কর্মকর্তার নেতৃত্বে বাড়ি দখলের চেষ্টার অভিযোগ রংপুর সিটি নির্বাচনে আ’লীগের মেয়র প্রার্থী ডালিয়া উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতা হাজ্জাজের বঙ্গবন্ধু ম্যুরালে শ্রদ্ধাঞ্জলী কেন্দ্রীয় অনুমোদন পেল সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট রংপুর জেলা কমিটি জাল দলিল করে জমি আত্মসাৎ করার ঘটনায় লিপি খান-শিমুল ভরসাসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা রংপুরে বিদেশে উচ্চ শিক্ষা নিয়ে বিশেষ আলোচনা রসিক স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মিলনের নির্বাচনী ওয়ার্ড কার্যালয়ের উদ্বোধন
শ্যামা সুন্দরী খাল নিয়ে লেখক রানা মাসুদের খসড়া প্রস্তাব

শ্যামা সুন্দরী খাল নিয়ে লেখক রানা মাসুদের খসড়া প্রস্তাব

শ্যামা সুন্দরী খাল নিয়ে লেখক রানা মাসুদের খসড়া প্রস্তাব

প্রকৌশলী আশুতোষ লাহিড়ী বিসিই যে পরিকল্পনা করেছিলেন এবং প্রজাহিতৌষী ডিমলার রাজা রংপুর পৌরসভার প্রথম চেয়ারম্যান জানকী বল্লভ সেন যে খাল ১৮৯০ খ্রিস্টাব্দে খনন করেছিলেন তাঁর মায়ের নামানুসারে তা আমাদের শ্যামা সুন্দরী খাল। ১৮৯০ খ্রিস্টাব্দে রংপুর শহরের আয়তন ও এর জনসংখ্যা কত ছিল আর আজ কত যে কোনও নতুন চিন্তা বা পরিকল্পনার আগে তা অবশ্যই বিবেচ্য। আরও বেশি বিবেচ্য সে সময়ের মানুষের এই খালের ব্যবহার ও আজকের আমাদের ব্যবহার এক কি না। এক কথায় বলা চলে শ্যামা সুন্দরী খাল মরেনি একে আমরাই মেরে ফেলেছি। রংপুরের দুঃখ শ্যামা সুন্দরী খাল না শ্যামা সুন্দরী খালের দুঃখ আমরা এও এক প্রশ্ন।

এই খাল অর্থাৎ শ্যামা সুন্দরী খালকে আজ অনেকেই রংপুর শহরের দুঃখ হিসেবে চিহ্নিত করছেন। দুষছেন বিভিন্ন কর্তৃপক্ষকে। আমাদের নিজেদেরকে কী আমরা আয়নায় দেখছি? আজকের শ্যামা সুন্দরীর পরিণতির জন্য কি আমরা কম দায়ি ? আগে এই খালের দুই ধারে অনেক খালি নিচু জমি ছিল; যা ছিল প্রকৃতপক্ষে শ্যামা সুন্দরীর অলিখিত ওভার লোডেড ট্যাংক বা পকেট। শ্যামা সুন্দরীর কোল যখন ভরা বর্ষার উপচানো পানি ধারণ করতে পারতো না তখন উপচে যাওয়া সে পানি জমা হতো খাল সংলগ্ন সেসব নিচু ভূমিতে। ফলে পানি উপচিয়ে শহর সয়লাব করতো না। এখন নগরের বিস্তৃতি ঘটায়, বাসস্থানের জন্য ব্যাপক ভূমির প্রয়োজন হওয়ায় সেসব নিচু জমি একে একে ভরাট হতে থাকে। উঠতে থাকে একের পর এক ছোট বড় অট্টালিকা। কিন্তু বিকল্প রিজার্ভার তৈরি হয় না। তৈরি হয় না নতুন নতুন সেসব বসতির সুষ্ঠু ড্রেনেজ ব্যবস্থা।

কেল্লাবন্দ এলাকার ক্যান্টনমেন্ট সংলগ্ন ঘাঘট নদী থেকে শুরু করে শহরের বিভিন্ন এলাকা দিয়ে গিয়ে এই খাল মাহিগঞ্জের মরা ঘাঘটের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী এই খাল ১৬ কিলোমিটার নয়, এটি ১০ কিলোমিটার এবং নগরীর উত্তর প্রান্তের আরেক গুরুত্বপূর্ণ কেডি খাল ৬ কিলোমিটার। ধীরে ধীরে শ্যামা সুন্দরীর দুই কোল জনবসতিতে পূর্ণ হয়ে ওঠে। দুই পাশের খালি জমি তো দূরের কথা খোদ শ্যামা সুন্দরীর দেহ কোথাও কোথাও চাপতে চাপতে এতোই সংকীর্ণ হয়ে যায় যে দেখে মনে হয় খালটার টুটি চেপে ধরা হয়েছে। এরপর আমাদের কেউ কেউ শহরের বর্জ্য পানি, অতি বৃষ্টির পানি ও পয়ঃনিষ্কাশনের জন্য নির্মিত এই খালটাকে বানিয়ে ফেলেছি ময়লা ফেলার উন্মুক্ত ভাগাড়। সোজা কথায় উন্মুক্ত ডাস্টবিন। বাড়ির ময়লা, বিভিন্ন স্থানের ময়লা পলিথিন প্যাকেটে করে অথবা খোলা ধুপ ধাপ করে ফেলছি এই শ্যামা সুন্দরীতে। কেউ কেউ প্রকাশ্যে আবার কেউ কেউ টুপ করে দেয়াল ডিঙিয়ে। আর পৃথিবীর যতো মিনারেল ওয়াটারের এবং কোল্ড ড্রিংস, এনার্জি ড্রিংসের প্লাসটিক বোতলের যেন নিরাপদ আশ্রয় এই শ্যামা সুন্দরীর কোল। এসব বোতল হেঁটে আসে না আমাদের কেউ কেউ ফেলি। আরও আছে। রাবিস, কোনও কাজের উচ্ছিষ্ট ময়লা এমনকি বিভিন্ন স্থানের খননকৃত মাটিরও আশ্রয় এই শহরবাসীর স্বাস্থ্যসেবার উপকারী খালের গতর। এরপর আছে খালের সাথে সরাসরি সংযুক্ত করা বাথরুম ও পায়খানার পাইপ।

পানির প্রবাহ না থাকায় তথা ঘাঘটেও তেমন পানি না থাকায় এই খালের ভেতর এখন আর পানির প্রবাহ থাকে না। ফলে খালের পানি কার্যত স্থির বা বদ্ধ থাকে এবং যা হবার তাই হয়, পঁচা, মজা সে পানি শুধু দুর্গন্ধ ছড়ায় না এতে মশার আন লিমিটেড বংশ বিস্তার ঘটে। সোজা কথা বর্তমান একটা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের কমপ্লিট প্যাকেজ এই শ্যামা সুন্দরী খাল। এসব কারণে একাধিকবার এই খাল খনন ও অন্যান্য পরিকল্পনা নিয়েও কার্যত ফলপ্রসূ কোনও উপকারে আসছে না। আবার ভরাট হচ্ছে। আবার মজে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।

গতবছরের ২৭ সেপ্টেম্বর এক রাতের রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাতে পুরো রংপুর শহর জলমগ্ন হয়ে পড়ে। গত ৪ অক্টোবর রাতের বৃষ্টিতেও শহরের বেশ কিছু এলাকা জলমগ্ন হয়। ড্রেনেজ ব্যবস্থা বিশেষ করে শ্যামা সুন্দরী খালের দিকেই মানুষের অভিযোগের তীর। তীর এর অভিভাবক সংস্কারকের দিকে। এখানেই প্রশ্ন আসে, আসলে শ্যামা সুন্দরী খালের দায়িত্ব কীভাবে পরিচালিত হয়। শ্যামা সুন্দরী খাল পরিস্কার পরিচ্ছন্ন সংশ্লিষ্ট বিষয় দেখে সিটি কর্পোরেশন। জেলা প্রশাসন দেখে এর ভূমি ব্যবস্থাপনা এবং তাঁদের বাস্তবমুখি জোর পদক্ষেপের ফলে শ্যামা সুন্দরী খালের বেদখল হয়ে যাওয়া অনেক জমি সাম্প্রতিক সময়ে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। যেহেতু এটা একটা খাল সেহেতু নদী, নালা, খাল বিল যাদের দায়িত্বে সেই পানি উন্নয়ন বোর্ড দেখে এর খনন তথা সামগ্রিক সুরক্ষা সংশ্লিষ্ট বিষয়। বর্তমানে শ্যামা সুন্দরী খাল নিয়ে একটা শক্তিশালী কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং তাঁরা এ নিয়ে কাজ করছেন। করোনা পরিস্থিতির কারণে এই কমিটির বেশ গুরুত্বপূর্ণ কিছু কাজ বিঘ্নিত হয়।

আমার ব্যক্তিগত অভিমত যে এই খালকে ওপেন অর্থাৎ বর্তমান খোলা অবস্থায় রেখে আসলে এর কোনও উন্নয়ন পরিকল্পনার দীর্ঘস্থায়ী সুফল সম্ভব না। ওই যে বলেছি আমরাই এর অপব্যবহার করা থেকে থামবো না। আমার ক্ষুদ্র চিন্তায় মনে হয় যেহেতু এটা একটা প্রবাহহীন খালে পরিণত হয়েছে এবং এতে কোনও ভাবেই আগের সেই পানির প্রবাহ ফিরিয়ে আনা সম্ভব না যেহেতু পানির যোগানদাতা ঘাঘটের অবস্থাই শোচনীয়। তাই এই খালের জনবসতিপূর্ণ এলাকার অংশ পুরো খালের প্রস্থ অনুযায়ী বক্স খাল আকৃতির রড সিমেন্টের খাঁচায় বন্দি করাটাই বেশি শ্রেয় হবে। ড্রেন সংযোগ ও উপরের পানি বক্স খালের ভেতরে নেবার জন্য বিশেষ জালির ব্যবস্থা রাখতে হবে এবং প্রতিটি ড্রেনের সংযোগ মুখ এমনভাবে জালি দিয়ে সুরক্ষা করতে হবে যাতে করে কোনও পলিথিন, প্লাস্টিক বোতল, প্রবাহিত হয় না এরকম ময়লা-আবর্জনা তাতে আটকে যায়। এই আবদ্ধ বা বক্স খাল থাকবে শুধু বসতিপূর্ণ ও খালের ক্ষতি করে এরকম এলাকায়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আমরা বিশাল বিশাল ম্যানহোল বা আন্ডারগ্রাউন্ড স্যুয়ারেজ সিস্টেমের কথা জানি। সেগুলোর গভীরতা অনেকখানে বিশ-ত্রিশ ফুটের মতো এবং চওড়াও যথেষ্ট। শ্যামা সুন্দরী খালের কাজ হচ্ছে পয়ঃনিষ্কাশন। অনুরূপভাবে স্যুয়ারেজ ধরনের বক্স ড্রেনেজ সিস্টেমের কাজও পয়ঃনিষ্কাশন। আমরা তিস্তার মতো দুর্দান্ত নদীকে যখন শাসন করে নির্দিষ্ট একটা আকার দেবার পরিকল্পনা করতে পারি তখন বর্তমান শহরের নানাবিধ সমস্যার উদ্রেককারী একটা খালকে কংক্রিটের বক্সে আবদ্ধ করলে তো কোনও ক্ষতি হবে না। এরপর যদি আমরা সেই বক্স খালের উপর দিয়ে রাস্তা করতে পারি তবে শহরের একটা বিকল্প রাস্তা তৈরি হবে। এই একটা বিকল্প রাস্তা শহরের অসহনীয় যানজট নিরসনের জন্য খুব দরকার অথচ রাস্তা করার জন্য কোনও জমি নেই। ফলে আরেকটা রাস্তা তৈরি করাও অসম্ভব। শ্যামা সুন্দরীর বক্স খালের উপর দিয়ে যদি সেই রাস্তা তৈরি করা যায় তবে তা শহরের যানজট নিরসনে দারুণ ভূমিকা রাখবে। শহরবাসী শ্যামা সুন্দরীর ডাবল উপকারভোগী হবেন। এখন কথা আসে অর্থ সংস্থানের বিষয়ে। সরকারী কিংবা সাহায্য সংস্থার পাশাপাশি পিপিপি তথা সরকার-বেসরকারি অংশীদারিত্ব মূলক পরিকল্পনা নেয়া নেয়া যেতে পারে। উপকারভোগীতার জন্য কিছু চার্জ আরোপ করে ঋণ পরিশোধের উপায় খোঁজা যেতে পারে। আর উন্মুক্ত জলাশয়ের পরিবেশ সংশ্লিষ্ট উপকারীতার অনুষজ্ঞগুলো যখন শ্যামা সুন্দরীর কাছ থেকে পাচ্ছিই না আমরা তখন এই প্রসঙ্গ উপস্থাপন করা শুধু লেখার পরিধি বিস্তৃতির নামান্তর হবে।

আজ দেশে এলিভেটেড এক্সপ্রেস হাইওয়ের পরিকল্পনা শুরু হয়েছে কারণ আমাদের যতই প্রশস্ত রাস্তা হোক না কেন দিন শেষে আমরা ওই রাস্তার গা ঘেঁষে দোকান কিংবা বাড়ি, মার্কেট করবো। ঠিক তেমনি যতই সুন্দর পাড় বেঁধে কিংবা গভীর খনন করে শ্যামা সুন্দরীকে সুন্দর ও কার্যকর রূপ দেই না কেন কয়েকদিন পরেই আমাদের কেউ কেউ একে সেই আগের অবস্থায় নিয়ে যাবো। আর আরেকটা স্বপ্নের কথা শোনা যায় যে, নিচে খাল ও উপরে ফ্লাই ওভার বা এলিভেটেট এক্সপ্রেসের মতো সড়ক নির্মাণ করলে শহরের যানজট নিরসনে যা কার্যকর হবে। কিন্তু শ্যামসুন্দরী যেরকম আঁকা বাঁকা তাতে কি এরকম কিছু নির্মাণ সম্ভব? উড়াল সড়ক উপরে হলেও নিচের খাল কি আমরা স্বাভাবিক রাখবো ? আজ যা করছি কালকেও তাই করবো।তার চেয়েও বড় কথা সেই বড় পরিকল্পনার অপেক্ষায় থেকে এখনকার দুর্দশা আর বাড়ানোও সমীচীন হবে না নিশ্চয়ই।

১৮৯০ খ্রিস্টাব্দে এই খালের খনন ( যদিও কারও কারও মতে একটা মরা নদীর কিছু অংশ পুনর্খনন) কাজে তৎকালীন রংপুর জেলা বোর্ড ও মিউনিসিপ্যালিটির যৌথ তত্ত্বাবধানে সম্পন্ন হয়েছিল। এ জন্য একটা কমিটি ছিল। তাতে ফ্রান্সিস হেনরী স্কিরিং নামক এক ইংরেজ প্রতিনিধির সাথে অন্নদা প্রসাদ সেন, সৌম্য মোহন চক্রবর্তী, গজদ্বীশ্বর তারকনাথ, কামাক্ষা চরণ মুখার্জি, সৈয়দ আবুল হায়াৎ, প্রসন্ন নাথ চৌধুরী, অক্ষয় কুমার মুখার্জি ও জানকী বল্লভ সেন নিজে ছিলেন। খালটি রাজা জানকী বল্লভ তাঁর মাতা শ্যামা সুন্দরী দেবীর নামানুসারে শ্যামা সুন্দরী খাল নামকরণ করেন এবং নিজ অর্থ ব্যয়ে এই কাজ সম্পন্ন করেন।

” পীড়া আঁকর ভূমি এই রঙ্গপুর,
প্রণালী কাটিয়া তাহা করিবারে দূর,
মাতা শ্যামা সুন্দরীর স্মরণে তরে,
জানকী বল্লভ সুত এক কীর্তি করে। ”

এই সেই ঐতিহাসিক পদ্যাংশ। এই সেই ঐতিহাসিক খাল। এই শ্যামা সুন্দরী খাল কোনও নির্দিষ্ট সংস্কার বা কমিটির পক্ষে এককভাবে রক্ষা করা সম্ভব না। এর রক্ষণাবেক্ষণ আমাদেরও দায়িত্ব। আমরা একে রক্ষা না করলে খোদ খনি থেকে তুলে এনে সোনা কিংবা রূপা দিয়ে এর চারপাশ বাঁধাই করলে কিংবা নদীর মতো গভীর করলেও কোনও লাভ নেই। আমরা আবার একে ভরাট করবো। সমস্যার মূল সেই সময়ের নগর বিন্যাস ও নগরীর জনসংখ্যা এবং এই সময়ের নগরের বিন্যাস ও জনসংখ্যা নিয়ে ভাবতে হবে। ভাবতে হবে কে ডি খাল নিয়েও। নগরীর প্রায় সকল পুকুর, ডোবা ভরাট হয়ে গেছে। নিচু জমিও এখন ভবনের দখলে। শহর এখন শহরতলী ছাড়িয়ে আরও দূরে চলে গেছে। তাহলে পানি যাবে কোথায়? সিটি কর্পোরেশনের ড্রেনেজ সিস্টেম যেটুকু চালু আছে তাও আমরা অচল করে দিচ্ছি পলিথিন আর যেসব বর্জ্য ফেলা যায় না সেসব দিয়ে। বুঝলাম এখন বেশ কিছু ড্রেন, ব্রিজ নির্মাণ কাজ চলছে বলে এরকম সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু এই ব্যবস্থার সুষ্ঠু পরিকল্পনা ও সমন্বয় করে করাও দরকার। আমরা এখানেও বাঁধা তৈরি করছি। রাস্তার গা ঘেঁষে স্থাপনা নির্মাণ করে ড্রেন করার পথ আগলে দিচ্ছি। একটার সাথে একটা বাড়ির দেয়াল তুলে নিজেরাই নিজেদের সমস্যা করছি। কেউ এক ইঞ্চি জায়গা ছাড়ছি না। নিজেদের পানি নিষ্কাশনের রাস্তাও ঠিকঠাক করছি না। তাহলে এখনকার অবস্থা এই হলে ভবিষ্যতে কী হবে একবার ভাবছি কি?

শহরের উত্তর অংশের পয়ঃনিষ্কাশনের জন্য প্রায় দেড়শো বছর আগে কৃষ্ণ ধন ঘোষ যিনি কেডি ঘোষ নামে পরিচিত ছিলেন তাঁর উদ্যোগে যে খালটি খনন করা হয় তা পরে তাঁর নামানুসারে কেডি খাল নামে পরিচিতি পায়ে। কৃষ্ণ ধন ঘোষ ছিলেন রংপুরের তৎকালীন সিভিল সার্জন। তাঁর পুত্র অরবিন্দ ঘোষ ছিলেন একজন বিপ্লবী নেতা। অরবিন্দ ঘোষ পরে ঋষী অরবিন্দ নামে পরিচিতি লাভ করেন। অরবিন্দ ঘোষের শৈশব ও ছাত্রজীবনের কিছুকাল রংপুরে অতিবাহিত হয়েছে। কেডি খাল শুধু ঐতিহাসিক নিদর্শন নয় এর প্রয়োজনীতাও গুরুত্বপূর্ণ। তাই এই খাল নিয়েও যুগপযোগী বৈজ্ঞানিক চিন্তা ভাবনা দরকার এবং তা অতি দ্রুত। গত চার অক্টোবরের বৃষ্টিতেই এই খাল সংলগ্ন এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে।

বৃষ্টির কারণে গত বছর এবং দুদিন আগের শহরের অবস্থা আমাদের তাগিদ দিয়েছে দ্রুত পদক্ষেপের। এখন অতি বা একটু জোরে বৃষ্টি হলেই নগরবাসী জলমগ্ন হবার আতঙ্ক করেন। এই উদ্বেগ আতঙ্ক থেকে স্বভাবতই নগরবাসী পরিত্রাণ চায় এবং তা যত দ্রুত সম্ভব। আমরা ভীষণ আশাবাদি সংশ্লিষ্ট মহল খুব দ্রুত স্থায়ী কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

ধন্যবাদ
রানা মাসুদ

সাহিত্যকর্মী, রংপুর।

সংবাদটি সবাইকে জানাতে আপনার স্যোস্যাল অ্যাকাউন্ট দিয়ে শেয়ার করুন




©২০২২ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। আর এন এস নিউজ ২৪.কম।