বেলায়েত হোসেন পীরগঞ্জ রংপুরঃ রংপুরের পীরগঞ্জে উপজেলা বন কর্মকর্তা স্বয়ং কাঠ ব্যবসায়ী ও বন-চোরদের সাথে যোগ-সাজশ করে দিনে দুপুরে সরকারি রাস্তা ও বনের লক্ষ লক্ষ টাকার গাছ কেটে সাবাড় করেেছন মর্মে অভিযোগ উঠেছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে উপজেলা বনকর্তা এখন শেয়াল পন্ডিতের ভূমিকায়। প্রাপ্ত অভিযোগে প্রকাশ, উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যাক্তির অভিযোগ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলা বন কর্মকর্তা শাজাহান মিয়া দীর্ঘদিন থেকে বিভিন্ন এলাকার কাঠ ব্যবসায়ী ও বোন চোরদের সাথে যোগ সাজোস করে প্রতক্ষ্য ও পরোক্ষভাবে সরকারি বিভিন্ন রাস্তা ও কাদিরাবাদ বন-বিটের গাছ কেটে সাবাড় করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। ফলে বনবিট ও সড়কের গাছ উজাড় হচ্ছে। কেউ প্রতিবাদ করলে উল্টো তাদের বিরুদ্ধেই গাছচুরির মামলার দেয়ার ভয় দেখানো হয়। যে কারনে এলাকার কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পায় না। অভিযুক্ত কর্মকর্তা উপজেলা বন-কর্মকর্তা ও কাদিরাবাদ বনের বীট কর্মকর্তার দায়িত্বে রয়েছেন। গত কয়েকদিন কাদিরাবদ বনবীট এলাকায় এ ব্যাপারে সরেজমিনে অনুসন্ধানে গিয়ে কথা হয় এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যাক্তির সাথে। মদনখালি গ্রামের মহির উদ্দিনের পুত্র ইয়াকুব আলী (৪৫) জানায়-গত ৭ মে সন্ধ্যায় কালবৈশাখী ঝড়ে কাদিরাবাদ বনবীট এলাকায় প্রায় ৩০টি বড় ইউক্যালিপ্টাস ও অকাশমনি গাছ উপড়ে পড়ে। সুযোগ বুঝে ওই কর্মকর্তা শাহজাহান মিয়া তাৎক্ষনিক স্থানীয় কয়েকজন পেশাদার বনচোরকে ডেকে নিয়ে ওগুলোর সাথে আরও প্রায় ৫০/৬০টি বড় বড় দাঁড়ানো গাছ কর্তন করে ট্রলিযোগে পাচার করে। এদিকে উপড়ে পড়া ছোট আকারের বিক্রির অযোগ্য কযেকটি গাছ বনবিট অফিসে জমা রাখে। এ ঘটনার প্রতিবাদ করায় উক্ত কর্মকর্তা বনচুরি মামলার দেয়ার হুমকি দেন। গত ৪ এপ্রিল কালবৈখী ঝড়ে প্রায় শতাধিক বনের গাছ উপড়ে পড়লে তাও এলাকার কিছু কাঠ ব্যবসীদের ডেকে বিক্রি করেন বলে জানিয়েছেন হাসারপাড়ার ইলিয়াস, কাদিরাবাদের মজনুমিয়া, কোচার পাড়ার এন্তাজ আলীসহ ১০/১২ জনব্যক্তি। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান সামছুল আলমের সাথে কথা হলে তিনি এর সত্যতা স্বীকার করে বলেন- প্রতিবাদ করায় ইয়াকুব নামের এক ব্যাক্তি বন কর্মকর্তার মামলার হুমকি থেকে বাঁচতে আমার সাহায্য নিতে এসেছিল। টুকুরিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান জানান-সম্প্রতি আমার ইউনিয়নেও হরিন সিংহ গ্রামের রাস্তার গাছ কর্তন করায় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও বন কর্মকর্তাকে অভিযোগ দিয়েও কোন ফল পাইনি। অভিযোগের কয়েকদিন পর জানতে পারি ওই বন কর্মকর্তা এসে গাছচোরদের নিকট মোটা উৎকোচ নিয়ে গেছেন। এ ব্যাপারে উপজেলা বন-কর্মকর্তা শাজাহান আলীর সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি ব্যস্ততা দেখিয়ে কেটে পড়েন। অপরদিকে রংপুর বনবিভাগের মিঠাপুকুর রেঞ্জ কর্মকর্তা মুন্জুরুল করিম সেলিম এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন-এ ধরনের কিছু অভিযোগ আমরা পেয়েছি, অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এলাকাবাসী ও সচেতন মহল এ ব্যাপারে বন বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জরুরী হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন।