বধির মিজানকে চাকরী দিলেন রসিক মেয়র মোস্তফা

স্টাফ রিপোর্টার॥ একজন বধির কে চাকরি দিয়েছেন রংপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। মঙ্গলবার (১ মার্চ) প্রতিবন্ধী কোটায় (বিশেষ বিবেচনায়) সিটি কর্পোরেশনের যান্ত্রিক শাখায় মেকানিক্স সহকারি হিসেবে চাকুরী দেন তিনি।

মিজানুর রহমান মিজান ৮ম শ্রেণি পাশ। বসবাস করেন রংপুর নগরীর আলমনগর (আজিজ নগর) কলোনীতে। মিজান হাটতে পারেন, চলতে পারেন, শুধু কথা বলতে পারেন না। কথা বলতে না পারলেও ভালো মেকানিক হিসেবে কেয়া কসমেটিক কোম্পানীতে (প্রতিবন্ধী কোটায়) হেড মেকানিক হিসেবে যোগদান করেন। কোম্পানীতে কর্মরত অবস্থায় একটি দূর্ঘটনায় হাত দিয়ে কাজ করতে পারে না, বিধায় চাকুরীটা চলে যায়। বেশ কয়েক বছর থেকে বেকার জীবনযাপন করছেন মিজান।

এদিকে তার পিতা মঈন উদ্দিন রংপুর সিটি কর্পোরেশনের যান্ত্রিক শাখার হেড মেকানিক হিসেবে কর্মরত অবস্থায় ৩১ জানুয়ারী ২০২২ সালে মৃত্যুবরণ করেন। পিতার মৃত্যুতে ১ ছেলে, স্ত্রী ও মা কে নিয়ে পরেন বিপাকে। বেকার মিজানের পক্ষে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পরে।

রংপুর প্রতিবন্ধী ফাউন্ডেশনের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেনের পরামর্শে বধির মিজান রংপুর সিটি কর্পোরেশনে চাকুরীর জন্য আবেদন করেন। বধির মিজানের কষ্টের কথা শুনে তাৎক্ষনিকভাবে রংপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা প্রতিবন্ধী কোটায় (বিশেষ বিবেচনায়) সিটি কর্পোরেশনের যান্ত্রিক শাখায় মেকানিক্স সহকারি হিসেবে চাকুরী দেন। মঙ্গলবার (১ মার্চ) চাকুরীতে যোগদান করে বধির মিজানুর রহমান মিজান খুবই খুশি।

মিজানুর রহমান মিজান চাকুরী পাওয়ায় আনন্দ প্রকাশ করেন এবং ইশারায় ভাষায় মেয়রের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

এদিকে রংপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের এই মানবিক উদ্যোগকে বধির সংঘরে অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাধুবাদ জানিয়েছেন।
মিজানুর রহমান মিজানের স্ত্রী নিলুফার নাজনিনও একজন বধির। তার ১ ছেলে নাঈম ইসলাম নগরীর রবার্টসন্স বিদ্যালয়ে ৭ম শ্রেণিতে পড়েন। মিজান বধিরদের নিয়ে সংগঠন কওে ভালো সংগঠক হিসেবে বেশ সুনাম কুড়িয়েছেন ইতিমধ্যে।
মিজানকে চাকুরী দেয়ায় রংপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফাকে ধন্যবাদ জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন বধির সংঘ রংপুরের সভাপতি এডভোকেট জোবাইদুল ইসলাম বুলেট। এ বিষয়ে তিনি সংবাদ মাধ্যমকে জানান, মেয়রের এই মানবিকতা দিশেহারা মিজানের জীবনকে আলো’র পথ দেখালো। একটি অসহায় পরিবারের কর্মসংস্থান হলো। তিনি মেয়রের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

নজরুল সংঘের সাধারণ সম্পাদক রশিদুস সুলতান বাবলু বলেন, মিজানের চাকুরির আবেদন নিয়ে মেয়র মহোদয়ের কাছে গেলে তিনি অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে বিষয়টি গ্রহণ করেন।
তাকে চাকুরিতে যোগদানের ব্যবস্থা করে দিয়ে মানবিকতার একটি উজ্জল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন।